ঢাকা: রাজধানীর কলাবাগানের বন্ধুর জন্মদিন পালন করতে বাসায় গিয়ে মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী আনুশকা নূর আমিনের মৃত্যুতে ফরেনসিক রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে।
রিপোর্টে দেখা যায় যোনি ও পায়ুপথে আঘাত এবং রক্তক্ষরণের চিহ্ন । বিকৃত যৌনচারে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই মৃত্যু হয়েছে আনুশকার।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কলাবাগান থানার পুলিশ পরিদর্শক আ ফ ম আসাদুজ্জামান প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, ৭ জানুয়ারি দুপুর ১২ টার দিকে ভিকটিমকে প্রেমে প্রলুব্ধ করে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে কৌশলে বাসায় নিয়ে যায় আসামি। এরপর সে ফাঁকা বাসায় ভিকটিমকে একা পেয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় আসামির অমানবিক কার্যকলাপের কারণে ভিকটিমের যৌনাঙ্গ ফেটে গিয়ে প্রচুর পরিমাণ রক্তক্ষরণ হয়। ভিকটিম অসুস্থ হয়ে পড়লে ঘটনাটি অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য তাকে আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টি সত্য বলে প্রতীয়মান হয়। এছাড়া আসামি মামলার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
জবানবন্দি রেকর্ড করার পর ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশীদ মামলার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৬ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।
এর আগে শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদের নেতৃত্বে ওই স্কুলছাত্রীর মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
ময়নাতদন্ত শেষে ডা. সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন, ‘ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। ধর্ষণের ফলে যৌন ও পায়ু পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃত্যুর পূর্বে চেতনানাশক কিছু খাওয়ানো হয়েছে কিনা, তার জন্য প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহ করে কেমিক্যাল পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। এসব রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাবে।’
এদিন দুপুর ১টায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি দিতে রাজি হওয়ায় দুপুর সোয়া ২টার দিকে তাকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হয়। তিনি এই বিচারকের খাসকামরায় জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান সিএমএম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দিনগত রাতে নিহত আনুশকার বাবা মো. আল-আমিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় একমাত্র আসামি করা হয়েছে আনুশকার প্রেমিক ইফতেখার ফারদিন দিহানকে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের নিউ মার্কেট জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) আবুল হাসান বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ এর ২ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন নিহত আনুশকার বাবা আল-আমিন।
মামলায় ইফতেখার ফারদিন দিহানকেই একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
তাকে আমরা বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) রাতেই আটক করেছি, এখন তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
এ ঘটনায় আরও তিনজনকে আটকের বিষয়ে এসি আবুল হাসান বলেন, বাকি তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। তাদের ডিজিটাল ডিভাইসগুলো আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছি।
তাদের কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদেরও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনায় আনুশকার প্রেমিক ইফতেখার ফারদিন দিহানসহ চার জনকে আটক করেছে কলাবাগান থানা পুলিশ।
আরসিএন ২৪বিডি. কম/ জিএমএম
আপডেট: ৯:২৫ পিএম, জানুয়ারি ৮, ২০২১